রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
ঢাকায় ক্রমাগত অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। রাজধানীর বনশ্রীতে রোববার রাতে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ছিনতাইকারীদের গুলিতে আহত হয়েছেন। একই রাতে মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগসহ আরও কয়েকটি এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে।
বনশ্রীতে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে ছিনতাই
জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে দশটার পর বনশ্রীর ডি ব্লক থেকে নিজের বাসায় ফেরার পথে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন। তিনটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে ঘিরে ধরে, গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত করে। তারা তার কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
ঘটনার পরপরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং আহত আনোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসকদের মতে, তার শরীরে চারটি গুলির চিহ্ন রয়েছে এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতও পাওয়া গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা
একই রাতে মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় রিকশা থামিয়ে তিন নারীকে ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়। এছাড়াও হাজারীবাগ এবং গ্রিন মডেল টাউনে ছিনতাই ও ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। অপরাধের এ ঊর্ধ্বগতিতে নগরবাসী আতঙ্কে রয়েছে।
ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও আলটিমেটাম
রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য সরাসরি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায়ী করেন। তারা সোমবারের মধ্যে তার পদত্যাগের দাবি জানান।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার মতে, “যারা অপরাধ করছে, তাদের ঘুম হারাম করে দেওয়া হবে।” তিনি আরও জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত উন্নত হবে এবং পদত্যাগের কোনো প্রশ্নই আসে না।
রাজধানীবাসীর দৃষ্টি সরকারের পদক্ষেপের দিকে
যখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলন করছিলেন, তখনই হাজারীবাগ ও ধানমন্ডিতে নতুন ছিনতাই ও ডাকাতির খবর আসে। ধানমন্ডিতে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়লে মসজিদ থেকে মাইকিং করে সতর্কতা জারি করা হয়।
এখন প্রশ্ন থেকে যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হবে? অপরাধ কমাতে প্রশাসনের ভূমিকা কতটা কার্যকর হবে? এ নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজধানীবাসী।